এসএম জাহাঙ্গীরের কবিতা : মুক্তিযুদ্ধ ও মানচিত্র

, , No Comments

এসএম জাহাঙ্গীরের কবিতা : মুক্তিযুদ্ধ ও মানচিত্র

Logoআপডেট:
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০১৪







কৈশোরের প্রথম প্রহর সনটি ১৯৭১ তারিখটি মনে নেই
বারটি বুধবার, সমঢটি পড়ন্ত বিকেল
ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে আসছে সমস্ত পৃথিবী
পূর্ববাংলাকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল,
পাকিস্তানিী হানাদার গোষ্ঠী। তখন কিছু মুক্তিপাগল



বীরসন্তান, অসংগঠিত সশস্ত্রবাহিনী
সকলে মিলে করেছিল সম্মুখ ও গেরিলা সমর,
দেশমাতৃকার মুক্তির চেষ্টা চলছিল আপ্রাণ
স্থানটি মাদাম ব্রীজ, ব্রীজটি তখন একটু দক্ষিণে ছিল
হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি আমি। মনের মধ্যে ভীষণ শঙ্কা



এক পা সামনে দিলে তো তিন পা পেছনে যাচ্ছি
তবুও আমাকে যেতেই হবে গন্তব্যে।
বদরুল আলম স্যারের বাসার সামনে থেকে
পূবদিকে মোচ্ছার ঘর পর্যন্ত রাস্তার পাশে
বাংকারের ভেতর পাঞ্জাবীদের অস্ত্রশস্ত্র ছিল সজ্জিত।



তখনকার মুর্হূতে ছোট্ট ছোট্ট ক্যাম্পে
কেউ কেউ খাচ্ছে রুটি আগুনে ছ্যাঁকে ছ্যাঁকে, খাচ্ছে মাংস
হিংস্্র হায়নার মতো। তখন পর্যন্ত আমি স্পীডবোট দ্যাখিনি কখনো
হঠাৎ পূব দিক থেকে একটি স্পীডবোট
এসে ব্রীজের সাথে ভিড়লো।



এক রূপসী ষোড়শী রমণী তার মাথায় ও
চতুরদিকে অস্ত্রশস্ত্র তাক করানো
রমণীর পবিত্র দেহ, পাঞ্জাবীদের বুটের নিচে চেপে আছে।
কি নির্দয় টেনে হিঁচড়ে নামাচ্ছে যবতীকে
মৃত্যুর ভয় ওর নেই, বুক ফাটিয়ে চিৎকার করে
আমাকে বাঁচাও, বাঁচাও, কে আছ বাঁচাও।



অজস্্র অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে পবিত্র মাটিতে
নিচ থেকে উপরে টেনে নিয়ে আসছে খুব দ্রুত
শকুনের দল তখন মনে হচ্ছে রাস্তাতে ভাগ বসাবে
এতক্ষণে হিংস্্র এক কুকুর টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলছে
গায়ে থাকা ব্লাউজ, সম্পূর্ণ বিবস্ত্র রমণী!



হাত দিয়ে না না শব্দ, মুখ থেখে বের হচ্ছে করুণ আর্তিতে
নিয়ে গেলো পাশের একটি ক্যাম্পে, এ অমানবিক দৃশ্য
সহ্য হওয়ার মতো নয়। সেই থেকে কি এক যন্ত্রনা,
ঠুকরে ঠুকরে দগ্ধ করছে আমাকে, বিদ্ধ করছে হৃদয়।



এইভাবে লাঞ্ছিত হলো অগণিত মা-বোন শহীদ হলো বীর সন্তান,
মুক্ত হলো দেশমাতৃকা, পেলাম একটি লাল সবুজের পতাকা ও মানচিত্র।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন