‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত হচ্ছে না’
বিশেষ প্রতিবেদকডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধনে আঙুলের ছাপ কোথাও সংরক্ষিত হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজ, অবৈধ ভিওআইপি পরিচালনাকারীরা একজোট হয়েছে। তারা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশনের বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, সিম রেজিস্ট্রেশনের সময় নেওয়া আঙুলের ছাপ বিদেশি বেনিয়াদের কাছে বিক্রি করা হবে।’
রবিবার সচিবালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন নিয়ে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত ১৬ ডিসেম্বর দেশে বায়োমেট্রিক বা আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আঙুলের ছাপ সংরক্ষণে রাখার কোন প্রযুক্তি মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে নেই। এছাড়া আইনেও এটা করার অনুমোদন নেই। আঙুলের ছাপ সংরক্ষণের জন্য মোবাইল কোম্পানিগুলো অর্থায়নও করেনি। মোবাইল কোম্পানিগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে গ্রাহকদের তথ্য ও আঙুলের ছাপ যাচাই করছে।’
‘তারানা হালিম রাঘব বোয়ালদের ভয় পায় না’ মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ ভিওআইপি কোটি কোটি টাকার ব্যবসা, কোটি কোটি টাকার ব্যবসায় হাত পড়লে কারো ভাল লাগার কথা নয়। মানবপাচারের ব্যবসায় হাত পড়লে কারো ভাল লাগার কথা নয়। কাজেই জলহস্তী, কুমির, বাঘ একসঙ্গে হয়েছে তো তাই প্রপাগান্ডা চলবে।’
বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন পুরোপুরি নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় কাজ হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কাজটি সফল হতে যাচ্ছে তাই এটিকে বাধাগ্রস্ত করা হবে। কোন মোবাইল ফোন অপারেটর এমন কোন সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে পারেনি। যারা মাধ্যমে তারা এ জিনিসটি সংরক্ষণ করে রেখে দিতে পারবে।’
তারানা বলেন, ‘এমটবের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমাদের এ প্রজেক্ট যদি ভেঙে যায় তবে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে মোবাইল ফোন অপারেটররা। কারণ তাদের সিম বিক্রি কমে যাচ্ছে। এতে তাদের ব্যবসাও কমে যাচ্ছে। তারা হয়তো নির্দেশনাটা মানতে বাধ্য হচ্ছেন।’
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের প্রক্রিয়া আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বলেও জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস) মো. এমদাদ উল বারী জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ কোটি ৫৩ লাখ সিম নিবন্ধন করা হয়েছে।
সভায় নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সিস্টেমটা শুধু ভেরিফিকেশনের জন্য। এখান থেকে কোন ডাটা অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেউ চেষ্টা করলেও কোন তথ্য নিতে পারবে না, এটা একেবারেই সম্ভব নয়। এ ডাটাবেজটা তৈরিই করা হয়েছে নাগরিকদের তথ্য ভেরিফাই (যাচাই) করার জন্য।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এটা (অপপ্রচার) করছে একটা ছোট্ট গোষ্ঠী। সেটা চাঁদাবাজ হতে পারে, সেটা হতে পারে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী বা হুমকিদাতা। যারা বায়োমেট্রিক সিম রেজিস্ট্রেশনের বিরোধিতা করছে বা এটা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে তাদের ভেরিফিকেশন দরকার। আমরা গোড়ায় হাত দেব। তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করব। এ উদ্যোগ আমাদের নিতে হবে।’
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন