![](https://lh3.googleusercontent.com/blogger_img_proxy/AEn0k_spw_fs4M_8R0K9n_yHeHvsHo4nkTydqokstTx5D-_Hi4f-q5c4-uWltQhjnG-UuMKCSwOYJWcYGcU8bfKQq-NyKGKEK71DmOIFqUY0-JSYU1wDFnbWTt4x=s0-d)
এবি প্রতিবেদক
আজ ১৫ আগস্ট(শনিবার) জাতীয় শোক দিবস। এ দিনটি বাঙালির জীবনে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক।
১৯৭৫ সালের এই কালরাতে বাঙালি জাতির ইতিহাসে কলঙ্ক লেপন করেছিল সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল সদস্য। ঘাতকের নির্মম বুলেটে সেদিন ধানম-ির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক ভবনে শাহাদতবরণ করেছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের ও কর্নেল জামিল। খুনিদের বুলেটে সেদিন প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে। প্রতিবছর ১৫ আগস্ট ফিরে আসে বাঙালির হূদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস হয়ে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বাঙালী জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে। এবারও তার ব্যাতিক্রম নয়। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ এই দিবসটি পালন করবে গোটা দেশ। সকাল জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, কালোব্যাজ ধারণ, শোক র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরে দুপুরে এতিম ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরন করা হবে। এ ছাড়া জাতির পিতার আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনায় সকল মসজিদ ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ৬টা ৪২ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা)। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
প্রসঙ্গত, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম শেখ লুত্ফর রহমান এবং মাতা সায়রা খাতুন। তাকে ভালোবেসে সবাই খোকা বলে ডাকতো। ছোটবেলা থেকেই মানুষের দুঃখ কষ্ট তার হৃদয়ে দাগ কেটে যেত। তার অসীম সাহসিকতা, দূরদর্শীতা, নেতৃত্ববোধের জন্য পৃথিবীর বুকে এক নতুন স্বাধীন দেশের মানচিত্র তৈরি হয়। একজন প্রকৃত নেতার সব গুণ তার মধ্যে ছিল। তিনি বাঙালির অস্তিত্বকেই নিজের অস্তিত্ব হিসেবে কল্পনা করতেন। তার ৭ মার্চের ভাষণ শুনলে এখনও শরীর শিহরিত হয়। যে ভাষণ শুনে এদেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য নিজের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। ‘দুঃখী’ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত নিরলস ও প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছেন জনদরধি এ নেতা। তাইতো তিনি আজও অমর হয়ে আছেন ১৬ কোটি বাঙ্গালির হৃদয়ে। মৃত্যুর ৪০ বছর পরও বাংলার মানুষ ভুলেনি জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে।