সেন্টার ফর মাইম এন্ড পেন্ট মাইম’র মূকাভিনয় কর্মশালার সমাপ্তি
মাহফুজ রিপন
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে অনুভূতির শিল্পকলায় একটি আশ্চর্য উদাহরণ নির্বাক অভিনয়। এ স¦তন্ত্র শিল্পটি দাঁড়িয়ে আছে দু'টি স্তম্ভের উপর।
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে অনুভূতির শিল্পকলায় একটি আশ্চর্য উদাহরণ নির্বাক অভিনয়। এ স¦তন্ত্র শিল্পটি দাঁড়িয়ে আছে দু'টি স্তম্ভের উপর।
একটি শরীরের ভাষা অন্যটি ইলুশন। নিজের সত্ত্বাকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের
চরিত্রকে নিজের মধ্যে প্রতিস্থাপন করে শিল্পের রসকে আরও মধুর ভাবে ফুটিয়ে
তোলা যদি অভিনয় হয় আর সেটা যদি ভাষাহীনভাবে ঘটে তবে সেটা মূকাভিনয়।
মানুষ গুহাবাসী থাকাকালে পশু শিকার করার আগে মহড়ার মাধ্যমে শিকারে যেত,
মাইমের মাধ্যমে তারা একে অপরের সাথে ভাব বিনিময় করত এবং আরও মজার বিষয় হল-
মানুষ, হরিণ, বাঘ, সিংহ ইত্যাদি পশুর মুখোশ পরে মহড়া করত তাদের শিকারের
প্রয়োজনে।
সুপ্রাচীন এ নান্দনিক শিল্পের মধ্যে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে লুকিয়ে
আছে গভীর প্রতিবাদী শক্তি। মহান এ শিল্পের টানে প্রভাবিত হয়ে সেন্টার ফর
মাইম এন্ড পেন্ট মাইম আয়োজন করে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদশ
শিল্পকলা একাডেমি জাতীয় নাট্যশালার ১ নম্বর মহড়া কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় তিনদিন
ব্যাপি মূকাভিনয় কর্মশালা। ভারতের প্রখ্যাত মুকাভিনয় প্রশিক্ষক রণেন
চক্রবতী’র প্রশিক্ষণে ৩৩ জন নাট্যকর্মী এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ নেন।
কর্মশালায় হাতে কলমে উঠে আসে মূকাভিনয় শিল্পের নানা দিক । তার মধ্যে মাইম চর্চার ট্রিক্স, অভিনেতার কল্পনা শক্তি, পর্যবেক্ষণ, শরীরের ভাষা, অভিব্যক্তি, আত্মবিশ্বাস, শিল্পের পরিমিতি বোধ এবং প্রশিক্ষক রণেন চক্রবতী’র দীর্ঘ দিনের মাইমচর্চার কথামালার বন্দনা, যা সেন্টার ফর মাইম এন্ড পেন্টমাইম এর তিনদিন ব্যাপি মূকাভিনয় কর্মশালাকে করে তোলে সফল এবং সার্থক।
সমাপনী দিনে নৈঃশব্দ থেকে শুধু মাত্র দেহের ভাষা এবং মায়ার জাল দিয়ে
শব্দকে ধরার খেলায় মেতে ওঠেন ৩৩ জন তরুণ মাইম শিল্পী, চারটি দলে ভাগ হয়ে
নিজেদের মতো গল্প তৈরী করে তারা।
দল গুলোর প্রতীকি নাম দেয়া হয়- গোলাপ, বেলি, বকুল এবং জবা। প্রতি দলকে
সময় দেয়া হয়েছিল পাঁচ মিনিট। কর্মশালায় পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন সেন্টার ফর
মাইম এন্ড পেন্ট মাইম এর উপদেষ্টা নাট্যজন কাজী আমিরুল ইসলাম রুমী,
মূকনাট্য নিদের্শক অশোক মুখার্জী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মূকাভিনয়
ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল রিজোয়ান রাজন, অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক তাপস
সরকার, মূকনাট্য অভিনেতা রাজ ঘোষ এবং অভিনেতা নির্দেশক নিথর মাহবুব।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মূকাভিনয়
ফেডারেশনের সভাপতি নাট্যজন জাহিদ রিপন, মঞ্চকথা পত্রিকার সম্পাদনা পরিষদের
অন্যতম সদস্য ড. তানভির আহম্মেদ সিডনি।
উদ্বোধনী এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন সেন্টার ফর মাইম
এন্ড পেন্ট মাইম দলের চেয়ারম্যান নাট্যজন দেব প্রসাদ দেবনাথ। মঞ্চকথা
পত্রিকার সম্পাক এবং সেন্টার ফর মাইম এন্ড পেন্ট মাইম দলের মুখপাত্র
ওয়াহিদুল ইসলামের উপস্থাপনায় সমাপনী আসরে সকল প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ প্রদান
করা হয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন