, , No Comments

শাবনূরের পিতা হত্যায় অভিযুক্ত হচ্ছেন সিলেটের বিএনপি নেতারা

Logoআপডেট: শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০১৪
এবি প্রতিবেদক
জনপ্রিয় চলচ্চিত্রাভিনেত্রী শাবনূরের পিতা কাজী নাসিরকে গাড়ির ভেতরে পুড়িয়ে মারার ঘটনার চার্জশিট প্রস্তুত। আগামী রোববার ও সোমবার সিলেটের আদালতে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ চার্জশিট দেবে।

সিলেটে বেড়াতে এসে দক্ষিণ সুরমায় গাড়ির ভেতরেই দগ্ধ হয়েছিলেন কাজী নাসির। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনার পর ওসমানী হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ হযরত মানিকপীর (রহ.) মাজারস্থ কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল। এরপর চুপিসারে দু’-একবার সিলেটে এসে শাবনূর পিতার কবর জিয়ারত করে গেছেন। সঙ্গে এসেছিলেন তার মা।


পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় আড়াই বছর পর সিলেটের আদালতে এ চার্জশিট দেয়া হচ্ছে। চার্জশিটে বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তখনকার বিরোধী দল বিএনপির আন্দোলনের সময় দক্ষিণ সুরমায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়। ওই গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন শাবনূরের পিতা কাজী নাসির। শ’ শ’ মানুষের চোখের সামনেই তিনি গাড়ির ভেতরেই দগ্ধ হয়ে মারা যান। তবে, ঘটনার পর শাবনূরের পরিবারের লোকজন সিলেটে এলেও শাবনূর আসেননি। পরে তিনি পিতার কবর জিয়ারত করেছেন বলে মাজারস্থ এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। এ ঘটনার দীর্ঘ আড়াই বছর তদন্তের পর সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই সোহেল রানা এ চার্জশিট প্রস্তুত করেছেন।


শিগগিরই আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে তদ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আলোচিত এ মামলার প্রস্তুতকৃত চার্জশিটে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩৮ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অব্যাহতিদানের আবেদন করা হয়েছে বিএনপির নিখোঁজ থাকা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ও সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আহমদ দিনারসহ এজাহারভুক্ত ৩ জনকে।


অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন - জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, সিলেট মহানগরের সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ও জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আজমল বখত সাদেক, দক্ষিণ সুরমা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এ টি এম ফয়েজ, দক্ষিণ সুরমা ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক তাজরুল ইসলাম তাজুল, জেলা ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক শাকিল মোর্শেদে।


দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ জানিয়েছে, গত ২০১১ সালের ১৮ই ডিসেম্বর দক্ষিণ সুরমার চ-িপুলের বদিকোনা মসজিদের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ‘হবিগঞ্জ সুপার এক্সপ্রেসের নামের যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে চিত্রনায়িকা শাবনূরের পিতা বাসযাত্রী কাজী নাসির (৭০) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই হারুন মজুমদার বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা কোহিনূর, তুরন, রাসেল, মান্নান, মকসুদ, কামাল হাসান জুয়েলসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। এ ঘটনার সঙ্গে মামলার এজাহারনামীয় ১৬ আসামিসহ ৩৮ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় বলে তদন্তকারী সূত্র জানায়। যাদের সবাই বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী। তবে মামলার এজাহারে হুকুমদাতা হিসেবে উল্লিখিত নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ও এজাহারভুক্ত নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা দিনার ও কাদির মিয়ার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ৩৫ জনকে।


দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরসালিন চার্জশিট প্রস্তুতের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের ৩৮ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এজাহারে নাম থাকলেও বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ও ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার নিখোঁজ থাকায় এবং কাদিরের নাম-ঠিকানা সঠিক না পাওয়ায় চার্জশিটে তাদের অব্যাহতিদানের আবেদন করা হয়েছে। তিনি জানান, রোববার অথবা সোমবার সিলেটের আদালতে এ চার্জশিট দেয়া হবে।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন